1. news.baaztv@gmail.com : BaaZ TV : News Admin
  2. info@www.baaztv.online : BAAZ TV :
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৪:১৯ অপরাহ্ন

রামগতিতে টয়লেট নির্মাণে দুর্নীতি, নিম্নমানের কাজ ও লুটপাটের অভিযোগ

বাজটিভি প্রতিবেদন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভায় “ইমপ্রোভড হাউজহোল্ড টয়লেট” নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, পুরোনো ইট, নিম্নমানের খোয়া এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ ছাড়া গাফিলতিভাবে টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে মানসম্মত কাজ হচ্ছে না, অথচ বিপুল অঙ্কের সরকারি অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় দেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটারি প্রকল্প চলছে। এর অধীনে রামগতি পৌরসভায় ৭০০টি আধুনিক টয়লেট নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি টয়লেট নির্মাণে ৩ ইঞ্চি সিসি ঢালাই, ১০ রদ্দার ইটের গাঁথুনি, ৫ ইঞ্চি দেয়াল, ৭ ফুট উচ্চতা, ২৬টি রড, ৩ ইঞ্চি পুরু ছাদ, ১২টি রিং স্লাব, ৩০০ লিটারের পানির ট্যাংক ও বৈদ্যুতিক মোটর থাকার কথা। প্রত্যেকটি টয়লেট নির্মাণে বরাদ্দ ৭০,৩০০ টাকা

কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকল্পের মান বজায় না রেখে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করছে

এই প্রকল্পের কাজ পেয়েছে শামীম এন্টারপ্রাইজ, একতা ট্রেডার্স, মুক্তা এন্টারপ্রাইজ, তরুণ এন্টারপ্রাইজ, ফাতেমা এন্টারপ্রাইজসহ প্রায় ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রকৃত ঠিকাদারেরা সরাসরি কাজ না করে সাব-ঠিকাদারদের কাছে ৩০-৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন

ফলে—
মানসম্মত নির্মাণ হচ্ছে না
নিম্নমানের ইট, খোয়া ও রড ব্যবহার করা হচ্ছে
সিডিউল অনুযায়ী সিমেন্টের পরিমাণ দেওয়া হচ্ছে না
মোটরের জন্য পানির পাম্প বসানো হচ্ছে না
স্থানীয় বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক উপকরণ সংগ্রহ করা হচ্ছে

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকালে গৃহস্থদের ২-৩ বস্তা সিমেন্ট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। অনেক জায়গায় সিসি ঢালাই ছাড়াই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে

অনুসন্ধানে জানা গেছে,
🔹 উপসহকারী প্রকৌশলী তানভির হোসেন প্রকল্পের তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন
🔹 উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় ও পৌরসভা কার্যালয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চাইলেও কোনো সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি
🔹 মাঠপর্যায়ে কাজের সঠিক তদারকি না থাকায় অনিয়ম অব্যাহত রয়েছে

বিভিন্ন ওয়ার্ডের সুফলভোগীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব টয়লেট নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন—
🗣️ “কাজের সময় কোনো সরকারি কর্মকর্তা পরিদর্শনে আসেননি। প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদারেরা কর্ণপাত করেননি।”
🗣️ “অনেক টয়লেট নির্মাণের পরই ফাটল ধরেছে।”
🗣️ “মোটরের জন্য শুধু যন্ত্রাংশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু পানির পাম্প সংযোগ করা হয়নি।”

একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ডা. হেলাল বলেন—
✅ “আমি ১৪টি টয়লেটের কাজ করছি, কোনো অনিয়ম করিনি। তবে কিছু ঠিকাদার মাত্র ৬ ব্যাগ সিমেন্ট দিয়ে কাজ করছে, যা প্রকল্পের শর্ত লঙ্ঘন।”
✅ “অনেক জায়গায় ১০ ইঞ্চি গাঁথনি না দিয়ে ৩-৩.৫ ইঞ্চি গাঁথনি তৈরি করা হয়েছে। ফলে ইট চুরি হচ্ছে।”
✅ “নিম্নমানের নির্মাণের কারণে ইতোমধ্যেই কিছু টয়লেট ভেঙে পড়েছে।”

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী তানভির হোসেন বলেন—
🔸 “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তথ্য দেওয়া যাবে না।”
🔸 “৭০০ টয়লেটের মধ্যে ১৫০টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ৩৭০টির কাজ চলছে।”

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিলকিছ আক্তার বলেছেন—
📝 “সরেজমিন তদন্ত করে অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপসংহার

সরকারি প্রকল্পের টাকায় মানহীন কাজের মাধ্যমে দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ স্পষ্টসঠিক তদারকি না থাকায় বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় হচ্ছে এবং জনগণ প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছে না। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্নীতি রোধ করা যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© 𝐁𝐀𝐀𝐙 𝐓𝐕 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট