পানির নিচে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন এক জার্মান অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার। পানামা উপকূলে ১১ মিটার গভীরে একটি নিমজ্জিত ক্যাপসুলে ১২০ দিন অতিবাহিত করে এ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন ৫৯ বছর বয়সি রুডিগার কোচ। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) তিনি ৩০ বর্গমিটার আকারের সেই ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে আসেন।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তার এই অসাধারণ সাফল্যকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে, আমেরিকান নাগরিক জোসেফ ডিটুরি ফ্লোরিডার লেগুনে ১০০ দিন পানির নিচে থেকে এই রেকর্ড গড়েছিলেন।
রুডিগার তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘এটা একটি দারুণ অ্যাডভেঞ্চার ছিল। যদিও শেষ হয়ে গেল, তবুও এক ধরনের আফসোস হচ্ছে। সেখানে আমি আমার সময়টা দারুণ উপভোগ করেছি। শান্ত পরিবেশ এবং সাগরে আলোর খেলা সত্যিই অসাধারণ।’
ক্যাপসুলের পোর্টহোলের মাধ্যমে সাগরের মোহনীয় দৃশ্য দেখে তিনি বলেন, ‘এটি বর্ণনা করা যায় না, আপনাকে নিজেই এটি অনুভব করতে হবে।’
পানির উপরে উঠে একটি শ্যাম্পেইনের গ্লাস হাতে নিয়ে নিজের অর্জন উদযাপন করেন রুডিগার এবং পুনরায় ক্যারিবিয়ান সাগরে লাফিয়ে পড়েন। পরে তাকে একটি নৌকায় তুলে শুকনো স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তার জন্য একটি পার্টির আয়োজন করা হয়।
ক্যাপসুলের জীবনযাপন: রুডিগারের ক্যাপসুলটি ছিল আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন। এতে ছিল-
খাবার সরবরাহ এবং দর্শনার্থীদের জন্য একটি প্রবেশপথের ব্যবস্থাও ছিল। এমনকি একজন ডাক্তার নিয়মিত ক্যাপসুলটি পরিদর্শন করতেন। ক্যাপসুলটি সৌর প্যানেলের সাহায্যে চলত এবং একটি ব্যাকআপ জেনারেটর ছিল, তবে শাওয়ারের ব্যবস্থা ছিল না।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: ক্যাপসুলটিতে প্রবেশের আগে এক সাক্ষাৎকারে রুডিগার বলেছিলেন, ‘এটি সাগরে মানুষের বসবাসের সম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন ধারণা সৃষ্টি করবে এবং মানব বসবাস সম্প্রসারণের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ প্রমাণ করবে।’
রুডিগারের এই চ্যালেঞ্জের পুরো সময়টি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল, যা তার দৈনন্দিন জীবনধারণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করেছে।
সাগরের নিচে তার সফরের সময়, রুডিগারের প্রিয় বই ছিল জুলস ভার্নের ‘টোয়েন্টি থাউজ্যান্ড লিগস আন্ডার দ্য সি’। তিনি এই বইয়ের নায়ক ক্যাপ্টেন নেমোর একজন বড় ভক্ত।