যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও ফিলিস্তিনে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গাজা শাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৪৭ হাজার ১০৭ জনে পৌঁছেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নতুন মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় এই সংখ্যা বাড়ছে।
গত রোববার বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ১৫ মাসের লড়াই শেষ হলেও মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধবিরতির ফলে উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনুসন্ধান চালানোর সুযোগ পাচ্ছেন, আর সেখান থেকেই নতুন মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। অনেক মানুষ আগের হামলায় নিহত হয়েছেন, আর গাজা অঞ্চলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যুদ্ধের কারণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭২ জনের মৃতদেহ হাসপাতালে পৌঁছেছে এবং এখনও অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় পড়ে রয়েছে, যেগুলোর দিকে অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল প্রোটেকশন টিম পৌঁছাতে পারছে না।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর আহতদের সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ১৪৭ জনে পৌঁছেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহত বা নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে বলেছে, যাতে মৃতদেহ সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায় এবং সঠিক মৃত্যুর সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়। ইসরাইল নিয়মিতভাবে মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তবে জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানগুলোকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।
খ্যাতনামা ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেট জানুয়ারি মাসের শুরুতে এক গবেষণায় জানিয়েছে, যুদ্ধের প্রথম মাসে মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪০% বেশি হতে পারে।
যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গাজার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও, গাজার বাসিন্দারা এখনও তাদের প্রিয়জনদের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ত্রাণ কাজ ও পুনর্নির্মাণের জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।