৩১ বছর বয়সি আকাশ কৈলাশ কানোজিয়া, মুম্বাইয়ের একটি ভ্রমণ সংস্থায় ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতেন। ছোটবেলা থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে তিনি জীবনের এতদূর পৌঁছেছিলেন। নতুন জীবনের স্বপ্ন বুনতে বিয়ের আয়োজনও শুরু হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই এক ভুল অভিযোগ তার জীবন এলোমেলো করে দেয়।
বলিউড তারকা সাইফ আলি খানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আকাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরবর্তী তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং পুলিশ নিজেদের ভুল স্বীকার করে তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু এর মধ্যেই তার জীবন পুরোপুরি বদলে যায়।
গ্রেফতারের খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই তার হবু শ্বশুরবাড়ি বিয়ে ভেঙে দেয়। পাশাপাশি তার কর্মস্থল থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, তার পরিবারকেও সমাজের নানা কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পুলিশি নির্দোষ ঘোষণা সত্ত্বেও আকাশের জীবন থেকে কালিমা মুছে যায়নি।
আকাশ জানান, ১৭ জানুয়ারি তিনি ট্রেনে হবু শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন, তখনই ভারতীয় রেল পুলিশ তাকে আটক করে। অভিযোগ করেন, পুলিশ কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই সংবাদমাধ্যমে তার ছবি ও তথ্য প্রকাশ করে, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
তার বক্তব্য অনুযায়ী, সিসিটিভি ফুটেজে যাকে দেখা গিয়েছে, তার দাড়ি-গোঁফ নেই, অথচ আকাশের গোঁফ রয়েছে। তবুও পুলিশ ভুলভাবে তাকে গ্রেফতার করে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার শিকার করে। অনেক অনুরোধের পর তার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তি পেলেও, তার সম্মান ও জীবিকা ততক্ষণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
এ ঘটনার একদিন পর প্রকৃত অভিযুক্ত হিসেবে মুম্বাইয়ের ঠান এলাকা থেকে শরিফুল ইসলাম শেহজাদকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তদন্তের নতুন মোড়ে দেখা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ ও আঙুলের ছাপের সঙ্গেও তার মিল নেই। ফলে তদন্তের ধীরগতিতে উদ্বেগ বাড়ছে।
বর্তমানে আকাশ নিজের সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য লড়ছেন এবং প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করছেন, যাতে তার হারানো জীবন ফিরে পেতে পারেন।