কুড়িগ্রামের আলুচাষীরা এবার চাহিদার তুলনায় অধিক উৎপাদন করায় বড় ধরনের সংকটে পড়েছেন। বাজারে আলুর দরপতন হওয়ায় উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না তারা। ১০-১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হওয়ায় কৃষকরা মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়েছেন।
এ অবস্থায় মালয়েশিয়া ও নেপালে আলু রফতানির সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের কিছুটা স্বস্তি মিললেও, দাম না বাড়ায় ক্ষতি পুরোপুরি পুষিয়ে নিতে পারছেন না।
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার চর সারডোব গ্রামের কৃষক সফিকুল জানান, ৩০ শতক জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ করেও তিনি ১৫ হাজার টাকা লোকসানে পড়েছেন।
আরও বড় কৃষকদের অবস্থা আরও করুণ। কৃষক কাদের মিয়া দুই কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ৯৫ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। বর্তমান বাজারদর দেখে তিনি মারাত্মক দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
কৃষকরা বলছেন, এক একর জমিতে আলু উৎপাদনের খরচ ২ লাখ টাকা পড়ছে, যেখানে প্রতি কেজির উৎপাদন খরচ ১৬.৬৬ টাকা। অথচ বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ১০-১২ টাকায়।
কুড়িগ্রামের আলু রফতানিকারক সিরাজুল ইসলাম জানান, মালয়েশিয়া ও নেপালের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ৪৫ টন আলু চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়েছে। আরও কয়েকটি চালান পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে, আলুর বাজার দর না বাড়লে ক্ষতি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
কৃষকরা মনে করছেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনও জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আলুর চাহিদা বাড়ছে এবং ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন।
আলুর বাজার ও রফতানির পরিপূর্ণ সুবিধা পেতে হলে সরকারি নীতিগত সহায়তা ও ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ জরুরি, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।